খুরুশকুলে চাঁদা না দেয়ায় হামলা, আদালতে মামলা

বার্তা পরিবেশক
কক্সবাজার সদরের খুরুশকুলে চাঁদা না দেয়ায় মৃদুল কান্তি শর্মা (৪৭) নামে এক ব্যক্তির উপর হামলা চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আহত ব্যক্তি খুরুশকুল ইউনিয়নের (৬নং ওয়ার্ড) শীলপাড়া এলাকার মৃত সতীন্দ্র শর্মার ছেলে। এ বিষয়ে মৃদুল কান্তি শর্মা বাদী হয়ে চাঁদাবাজি ও প্রতারণার অভিযোগে কক্সবাজার সদর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতে দালাল ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক কাজল কান্তি দে সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামীরা বেআইনী অস্ত্রধারী, দুর্দান্ত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, পরধন লোভী, মাস্তান, প্রতারক টাইপের লোক হয়। তারা দেশের প্রচলিত আইন কানুনের তোয়াক্কা করে না। মামলা ১নং আসামী মিনু রানী দে এর মালিকানাধীণ ০.৪৫ একর বসতভিটি ও নাল জমি বিক্রিয় প্রস্তাব করলে মামলা বাদী তা ক্রয় করার জন্য সম্মতি প্রদান করে।

এরই পরিপেক্ষিতে ২০১৯ সালের ৫ নভেম্বর ও ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর অধীনের বসত ঘরে দুদফা ৫ লাখ ৫০ হাজার করে মোট ১১লাখ টাকা সাক্ষীগণের স্বাক্ষাতে প্রদান করে। জমির মালিক ওই ১১ লাখ টাকা বুঝে পাইয়া তার জমির মূল দলিল, মূল সৃজিত বি এস খতিয়ান, মূল খাজনার দাখিলা, মূল ডি,সি,আর এর কপি, পাসপোর্ট সাইজের ছবি, জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি মামলার বাদীকে দেয়া হয়। অল্পদিনের মধ্যেই রেজিষ্ট্রী অনুমতি পত্র সংগ্রহ করে বাদীকে বায়নাকৃত জমি ছাপ কবলা রেজিষ্ট্রী করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন এবং উক্ত বসত ভিটি ও নাল জমি বাদীর বরাবরে দখল অর্পণ করেন।

এরই ধারাবাহিকতায় বাদী ১নং আসামীর নির্দেশ মতে নিজ খরচে রেজিষ্ট্রী নিবার অনুমতি পত্র সংগ্রহ করে। কিন্তু মামলার ২নং আসামী স্থানীয় এলাকা জমি বিক্রির দালাল ( মধ্যস্থতাকারী) একই ইউনিয়নের (৬নং ওয়ার্ড) পূর্ব হিন্দু পাড়ার রনজিত কান্তি দে এর ছেলে কাজল কান্তি দে (৩২) নেতৃত্বে মৃত ছালেহ আহমদের ছেলে সুরত আলম (৩৮), মৃত চন্দ্র রুদ্র এর ছেলে নির্মল রুদ্র (৩৬) জমির মালিক ও জমি ক্রেতার মধ্যে ইতিপূর্বে জমি বিক্রির বায়নার কথা জানতে পেরে দুর্লোভের বশবর্তী হয়ে জমির মালিককে আর্থিকভাবে ওই জমি আরও অধিক মূল্যে বিক্রি করে লাভবান করে দিবে বিভিন্নভাবে পরোচনা দিয় থাকতো। উক্ত পরোচনায় পরোচিত হয়ে ছাপ কবলা রেজিষ্ট্রী দিতে গড়িমসী করে জমির মালিক।

ইতিপূর্বে গত ২০২০ সালের ৬ মার্চ সকাল আনুমানিক ৯ টার দিকে উল্লেখিত দালাল প্রকৃতির লোকেরা বাদীর বসত বাড়িতে গিয়ে ওই জমি ক্রয় করতে হলে তাদেরকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা হবে নতুবা তারা জমির মালিককে ফুসলি উক্ত জমি মামলার বাদীকে না দিয়ে অন্য কোন পক্ষকে রেজিষ্ট্রী দেবে হুমকি দেই। জমির মালিকও তাদের কথায় রেজিষ্ট্রী দিতে গড়িমসি শুরু করে। ওই চাঁদা দাবির বিষয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অভিযোগ করলে তারা উভয়পক্ষকে সালিশে আহবান করেন।

উক্ত আসামীরা ওই আহবানের কোন তোয়াক্কাও করেনি। পরে বাদি নিরুপায় এরই হয়ে ২০২০ সালের ১১ মার্চ উপরোক্ত আসামীদের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করায় বাদীকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি আসছিল।

এরই ধারাবাহিকতায় উক্ত আসামীরা যোগসাজস করে ১নং আসামীর ইন্ধনে চাঁদাবাজ কাজল কান্তি দে এর নেতৃত্বে অস্ত্র সজ্জিত হয়ে ২০২০ সালের ১৪ মার্চ সন্ধ্যার দিকে স্থানীয় কালী মন্দিরের পশ্চিম পার্শ্বে কালভার্টের উপরে বাদীকে প্রথমে নোংরা ভাষায় গালিগালাজ করে। এক পর্যায়ে কাজল কান্তি দে এর হাতে থাকা বন্দুক বাটি দিয়ে বুকের বাম পাশে জোরে বারি মারে, এরপরে এলোপাতাড়ি কিল, লাথি, ঘুষি মেরে মারাত্নক জখম করে।

এই সময় বাদির হাতে থাকা ১ভরি ওজনের স্বর্ণের ব্রেসলেট ছিনিয়ে নেয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কক্সাবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেন। এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন বাদী।